
সিবিএন ডেস্ক ;
রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একটি প্রচলিত বাক্য প্রায়ই উচ্চারিত হয়—”আমরা ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রের সব সংকটের সমাধান করব।” অথচ গত ৫৪ বছর ধরে বারবার এই একই দলগুলো ক্ষমতায় থেকেও সেই প্রতিশ্রুত সংকটসমূহের সমাধান দিতে পারেনি।
এখন প্রশ্ন হলো—আপনারা যাঁরা ক্ষমতায় যেতে চান, তাঁদের সমাধানের রূপরেখা বা ফ্রেমওয়ার্ক কোথায়? যদি রাজনৈতিক দল সত্যিকার অর্থেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে, তবে কেন এখনো পর্যন্ত এই জটিল রাজনৈতিক সংকটের সমাধানে সুস্পষ্ট ওয়ার্কপ্ল্যান জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি?
জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, মানবিক ও সামাজিক মর্যাদা এবং সকল শ্রেণির অন্তর্ভুক্তির বিষয়গুলো কতটা প্রতিফলিত হয়েছে আপনাদের প্রস্তাবিত পরিকল্পনায়—সেটি জনগণ জানতে চায়। কারণ, রাজনীতির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমকে ধোঁয়াশায় রেখে বিগত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে দেশের মানুষকে রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
জুলাই বিপ্লবের যে চেতনা—তা এই অসমতা, বৈষম্য ও জবাবদিহিহীন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একটি প্রত্যাবর্তনের আহ্বান। এখন সময় এসেছে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে এই সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখবে, সে ব্যাপারে জনগণের সামনে সুস্পষ্ট ও বাস্তবসম্মত কার্যপরিকল্পনা উপস্থাপন করার।
একটি রাষ্ট্র যুগের পর যুগ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জবাবদিহিহীনতার মধ্য দিয়ে চলতে পারে না। যদি কোনো রাজনৈতিক দল নিজেদের মেনিফেস্টো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই ব্যর্থতার ব্যাখ্যা ও দায় জনগণের কাছে দিতে হবে।
১৯৭১ সালে এই দেশের মানুষ সাম্য, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিল। কিন্তু ৫৪ বছর পরও সাধারণ মানুষ সেই স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পায়নি। কিছু রাজনীতিক ও ধনী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ছাড়া দেশের অধিকাংশ জনগণ আজও চরম বৈষম্যের শিকার। তারা মূলধারার বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, বঞ্চিত হয়েছে অংশীদারিত্ব থেকে।
এই গ্লানি ও হতাশা থেকে মুক্ত হয়ে আমাদের এখন প্রতিজ্ঞা করতে হবে—একটি নতুন, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলব। রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার মাধ্যমে রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা আমাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।
গণমানুষের সকল অংশের জন্য একটি ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠুক—এই হোক আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা।
বার্তা প্রেরক
আব্দুল মান্নান রানা
যুগ্ম-প্রধান লিডার, এলডিএস, সিইএইচআরডিএফ