
আবুল কাশেম, রামু;
কক্সবাজারের রামুর জোয়ারিয়ানালা হাজী মো. সাঁচি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করেও তালিব উল্লাহ ছিদ্দিকী নামের একজন শিক্ষক এ পদে নিয়োগ পান বলে জানা গেছে। নিয়োগে সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল তাকে নিয়োগ দেন।
২০১৫ সালে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পান তালিব উল্লাহ ছিদ্দিকী। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী আবেদনকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটে একটি মাত্র তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য ছিল। অথচ তালিব উল্লাহ ছিদ্দিকীর এসএসসি সনদে তৃতীয় বিভাগ, এইচএসসি-তে সম্পূরক এবং বিএ-তে দ্বিতীয় বিভাগ পাওয়া যায়। নীতিমালা অনুযায়ী, একাধিক তৃতীয় বিভাগ থাকলে আবেদনকারী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ারও যোগ্য নন।
বর্তমানে তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বও পালন করছেন। নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হলেও তা নানা কৌশলে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তৎকালীন নিয়োগ প্যানেলে থাকা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধি রাম মোহন রায় জানান, তিনি তালিব উল্লাহর দুটি তৃতীয় বিভাগের বিষয়টি জানতেন না। বিষয়টি চোখে না পড়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন।
বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ও নিয়োগ প্যানেলের সদস্য আজিজুল হক সিকদার বলেন, “তালিব উল্লাহ ছিদ্দিকীর সার্টিফিকেট দুর্বলতার বিষয়টি জানা ছিল। কিন্তু পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও দাতা সদস্যদের চাপে কিছু বলতে পারিনি।” তিনি অভিযোগ করেন, ডিজি প্রতিনিধি রাম মোহন রায়ও তালিব উল্লাহর ক্লাসমেট ছিলেন, যা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলেছে।
তালিব উল্লাহ ছিদ্দিকী প্রথমে নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি দাবি করলেও পরে নিজের শিক্ষাগত দুর্বলতা স্বীকার করে দায় চাপান নিয়োগ প্যানেলের ওপর। তিনি বলেন, “যাদের অভিযোগ আছে, তারা মাউশি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করুক।”
এদিকে শিক্ষানুরাগী ও সচেতন মহল অভিযোগ করেছেন, এ ধরনের জালিয়াতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে তালিব উল্লাহর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। দাবি না মানলে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ আন্দোলনে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।