নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি;
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ভাল্লুক খাইয়াতে বিজিবির অভিযানে ১২টি মায়ানমারের গরু জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ ঘটিকার সময় নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধীনস্থ ভাল্লুক খাইয়া বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. আজম খানের নেতৃত্বে টহল দল বিওপি থেকে উত্তরপশ্চিম দিকে রোহিঙ্গা টিলা নামক স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মালিক বিহীন মায়ানমার থেকে অবৈধ পথে আসা ৯টি মায়ানমারের (বার্মিজ) গরু জব্দ করে।
অপর দিকে বিকাল সাড়ে ৪ টার সময় নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র ব্যাটালিয়নের বিজিডিও-৩১৬ এডি মো. আল আমিন এর নেতৃত্বে বিশেষ টহল দল অভিযান চালিয়ে ব্যাটালিয়ন থেকে আনুমানিক ২ কিঃমিঃ দক্ষিণ- পূর্বে রামুর বড় জামছড়ি নামক এলাকা থেকে মালিক বিহীন অবৈধ ৩ টি মায়ানমারের (বার্মিজ) গরু উদ্ধার করে। বিজিবির অভিযানে সর্বমোট ১২টি মিয়ানমারের গরু জব্দ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, উদ্ধারকৃত গরু গুলি নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়ান বিজিবির হেফাজতে রয়েছে। উল্লিখিত জব্দকৃত গরু গুলি পরবর্তীতে নিলাম কার্যক্রম করার জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য,নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির নিয়ন্ত্রণাধীন ৪৮ নং সীমান্ত পিলার এলাকার বাংলাদেশ -মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার চেলিরটাল নামক জায়গা দিয়ে সীমান্ত এলাকার কয়েকটি প্রভাবশালী চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের লোকজনের মাধ্যমে হাঁটা পথে এনে কচ্ছপিয়ার বিভিন্ন ঘর এবং খামারে মজুদ করা হয় গরু এবং মহিষ। যা পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার এবং সোমবারে বাজারে তুলে দেশীয় রশিদের মাধ্যমে বিক্রি করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবহনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে সীমান্ত এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা হলে,তারা নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির জোন কমান্ডারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, দেশীয় খামারিদের বাঁচাতে হলে অভিযান আরো জোরদার করার দরকার।
জানা যায়, সীমান্ত দিয়ে অসাধু চোরাকারবারিরা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমার থেকে গরু নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকার ভিতরে নিয়ে আসে। উল্লেখ্য, নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারিরা প্রতিদিন শত শত গরু,মহিষ মিয়ানমার থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পারি দিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গা দিয়ে গর্জনিয়া ও চাকঢালার হাটে নিয়ে বিক্রি করে। এই গরু মহিষ,ইয়াবা পাচাররোধ করার জন্য বিজিবির অভিযান আরো জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন দেশীয় গরু খামারিদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, সীমান্ত সুরক্ষায় ১১ বিজিবির সদস্যরা কল্পনা অতীত ভাবে কষ্ট করে যাচ্ছেন, পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসা অবৈধ গরুর বিরুদ্ধে অভিযান আরো জোরদার করা হলে ; তাদের মতে দেশীয় গরুর খামারি যারা আছেন তারা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়াতে পারতেন।
এদিকে চোরাকারবারিরা সিএনজি সহ বিভিন্ন গাড়ি যোগে নাইক্ষ্যংছড়ির ফুলতলী,দুর্গম লেমুছড়ি,আশারতলী,তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে প্রতি নিয়ত দিনে-রাতে সমান তালে সার, বিস্কুট, চাউল, চিপস, তৈলসহ খাদ্য সামগ্র পাচার করে যাচ্ছে মায়ানমারে। এ নিয়ে সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এবং অভিযান আরো জোরদার করার জন্য বিজিবির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।