
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় মাত্র দুই দিনে পৃথক দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। একই স্থানে পরপর তিন দিনে তিনটি দুর্ঘটনায় অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। বারবার একই জায়গায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন, কেন এই এলাকায় এতবার দুর্ঘটনা ঘটছে এবং এর পেছনের প্রকৃত কারণ কী।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকার সড়কটি সংকীর্ণ হওয়ায় এটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। একইসঙ্গে এখানে একটি বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে, যেখানে প্রায়ই যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এছাড়া লবণবোঝাই ট্রাক থেকে চুইয়ে পড়া পানি সড়ককে পিচ্ছিল করে তোলে, যা দুর্ঘটনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র জানিয়েছেন, লবণ পরিবহণকারী ট্রাক থেকে পড়ে যাওয়া পানির কারণে রাস্তা অত্যন্ত পিচ্ছিল হয়ে যায়, যা বড় দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী মনে করেন, শুধু লবণ পানি নয়, ভোরের দিকে কুয়াশার কারণে সড়ক ভেজা থাকলেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি শুভরঞ্জন চাকমা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলটি বেশ ঢালু হওয়ায় চালকদের নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে, যারা এই সড়ক সম্পর্কে পরিচিত নন বা অন্য জেলা থেকে এসেছেন, তাদের জন্য এই বাঁক ও ঢাল বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এছাড়া, ভোরের দিকে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকায় অনেক চালক অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালান, যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
গত তিন দিনে পরপর তিনটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে এই এলাকায়। ঈদের দিন সকালে যাত্রীবাহী বাস ও মিনিবাসের সংঘর্ষে পাঁচ তরুণ ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং নয়জন গুরুতর আহত হন। পরদিন ভোরে একই এলাকায় দুটি পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে নয়জন আহত হন। সবশেষ বুধবার সকালে একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১০ জন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। প্রতিটি দুর্ঘটনাই দিনের প্রথমভাগে ঘটেছে, যা সংশ্লিষ্টদের জন্য নতুন করে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।