
রামু প্রতিনিধি;
রামু সরকারি কলেজের সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কলেজ অধ্যক্ষ হাসানুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন ইয়াবা মামলায় জেল খাটা এক ব্যক্তি ফোরকান উল্লাহ। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অধ্যক্ষ।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেল ৪টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের পূর্ব পাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছিলো, যা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাতঘরিয়া পাড়ার বাসিন্দা ফোরকান উল্লাহ। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একটি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ভাড়াটে হিসেবে কাজ করছেন।
ঘটনার দিন অধ্যক্ষ হাসানুল ইসলাম শিক্ষক ও সহকর্মীদের সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে ছিলেন। এমন সময় ফোরকান উল্লাহ প্রথমে মোবাইলে গালাগাল করে ফোন কেটে দেন, পরে হঠাৎ কলেজ কক্ষে প্রবেশ করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসে তাকে কক্ষ থেকে সরিয়ে দেন।
কলেজের ভূমি সংরক্ষণ কমিটির সদস্য অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, “ফোরকান উল্লাহর সঙ্গে কলেজের কোনো জমির সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই। ভূমিদস্যুদের একটি চক্র তাকে ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করছে।”
আইসিটি বিভাগের প্রধান শহীদুল হক কাজল বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের কক্ষে ঢুকে সন্ত্রাসী আচরণ কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষক সমাজের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”
অভিযুক্ত ফোরকান উল্লাহর বক্তব্যে দেখা গেছে অসঙ্গতি। তিনি একবার দাবি করেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তার জায়গা দখল করছে; আবার বলেন, তিনি কেবল মধ্যস্থতার চেষ্টা করছেন। যদিও তিনি নিজে জমির মালিক নন, তবু আদালতে মামলার কথা উল্লেখ করে জানান, এখনো সেখানে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
স্থানীয়রা জানান, একসময় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটা ফোরকান উল্লাহ বর্তমানে বিএনপির স্থানীয় নেতার পদ পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার বিরুদ্ধে আগেও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে এমন আচরণে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়েছে।