
আব্দুস সালাম, টেকনাফ:
সরকারি বরাদ্দের সিমেন্ট, বালু ও টিন নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার কথা ছিল একটি ট্রলারের। কিন্তু সেটি পৌঁছেছে মিয়ানমারে। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশি একটি পাচারকারী চক্র এই কাজের সঙ্গে জড়িত। ট্রলারটিতে ছিলেন তিনজন মাঝিমাল্লা।
জানা গেছে, বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে টেকনাফ উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা থেকে টিআর প্রকল্পের আওতায় সেন্টমার্টিনের পর্যটন তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্র সংস্কারের জন্য ২০ বস্তা সিমেন্ট, ৯ বান্ডিল টিন, ৩০ কার্টন টাইলস, ৩০০ ফুট বালু এবং ৭০ ফুট কাঠ বরাদ্দ দেওয়া হয় আশিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তির নামে। তবে অনুমতিপত্র জালিয়াতি করে তিনি ৪০০ বস্তা সিমেন্ট দেখিয়ে মালামাল গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে, টেকনাফ বিচ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আশিকুর রহমান, সেন্টমার্টিনের সাবেক ইউপি সদস্য আক্তার কামাল, নুরুল ইসলাম ও আবদুল মুনাফ মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে মালামালগুলো মিয়ানমারে পাচার করেছে। ট্রলারটি বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে পৌঁছেনি বলে নিশ্চিত করেছে ট্রলার মালিক সমিতি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, “২০ বস্তা সিমেন্ট বরাদ্দ দেওয়া হলেও অনুমতিপত্রে কারসাজি করে ৪০০ বস্তা দেখিয়ে পাচার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগের বিষয়ে আশিকুর রহমান বলেন, বরাদ্দের অনুমতিপত্র তার নামে থাকলেও ইউপি সদস্য মাহফুজা আক্তার তা গ্রহণ করেছেন। পরে তিনি জানতে পেরেছেন, মালামাল মিয়ানমারে পাচার হয়েছে। তবে তিনি নিজে জড়িত নন বলে দাবি করেন।
ইউপি সদস্য মাহফুজা আক্তারও জানান, অনুমতিপত্র হাতে পেলেও তারা মালামাল বুঝে নেননি। একটি চক্র তা জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়ে গেছে।
সেন্টমার্টিনের চোরাকারবারি হিসেবে পরিচিত আক্তার কামালের নাম উঠে এলেও তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি। কায়ুকখালী ঘাটের মাঝি আবদুল আলীম বলেন, “ভুয়া অনুমতি দেখিয়ে ট্রলারে মাল তোলা হয়, পরে জানতে পারি সেগুলো মিয়ানমারে গেছে।”
ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ জানান, ট্রলারটি এখনও দ্বীপে পৌঁছেনি। বরং সেটি মিয়ানমারে প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি চক্র সরকারি মালামাল জাল কাগজপত্রে মিয়ানমারে পাচার করে আসছে। যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে পাচার বন্ধ হবে না বলে মনে করছেন তারা।