নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের উখিয়ার ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাঁচটি ব্লক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরত পরিবারগুলোকে সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন ও একটি বেসরকারি সংস্থা। গত বছর বর্ষাকালে পাহাড়ধসে প্রাণ হারিয়েছিল ৭ জন রোহিঙ্গা। চলতি বছরও একই ধরনের বিপদের আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে নতুন ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এনজিও ‘ছওয়াব’। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে সংস্থাটি। বর্তমানে ক্যাম্প-১৪ এর ব্লক-ই-তে ১৫০টি শেল্টার নির্মাণের কাজ চলছে।
শেল্টার নির্মাণ প্রকল্পটি এনজিও বিষয়ক ব্যুরো ও প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় থেকে ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে অনুমোদন পায় (স্মারক নং- ০৩.০৭.২৬৬৬.৬৬৫.৬৮.০৫৭.২০-১১৪)। পরবর্তীতে ৩ মার্চ, ২০২৫ তারিখে RRRC এবং ৪ মার্চ, ২০২৫ তারিখে সিআইসি’র অনুমোদন পাওয়া যায়। এছাড়া ২৮ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে প্রকল্পটি শেল্টার সেক্টর কর্তৃক জেআরপি (জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান)-এর অধীনেও অনুমোদিত হয়।
‘ছওয়াব’ ক্যাম্প-১৪–এর ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারী ৩২২ পরিবারের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ১৫০ পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। ক্যাম্প ইনচার্জ ফারুক আল মাসুদ জানান, “ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের সরানো খুবই জরুরি। গত বর্ষায় ৭ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। এ বছর যাতে এমন না হয়, সে জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছিল যে ক্যাম্প-১৪-তে পাহাড় ও গাছ কেটে নতুন শেড নির্মাণ করা হচ্ছে, যা রোহিঙ্গাদের আগমনকে উৎসাহিত করতে পারে। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ব্লক ই-৩–তে কোনও গাছপালা বা পাহাড় ছিল না। এটি ছিল একটি খালি মাঠ, যেখানে আগে খেলাধুলা হতো। স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানান, এখানে কখনও গাছ লাগানো হয়নি।
তারা আরও বলেন, “গত বছর বর্ষায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে হাজার খানেক নারী-পুরুষকে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।”
সংস্থাটির কক্সবাজার জেলা কো-অর্ডিনেটর আবু সাদাত আহমেদ নোহ জানান, “২০১৭ সাল থেকে ছওয়াব ক্যাম্পে কাজ করছে। ৩২২ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের মধ্যে ১৫০ পরিবারকে বর্ষার আগেই নিরাপদ শেডে স্থানান্তরের কাজ চলছে। প্রায় চার মাস আগে থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। একটি মহল বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে প্রকল্পের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে।”
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত রোহিঙ্গা পরিবারগুলো বর্ষার সময় অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আশ্রয় পাবে। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যৌথ উদ্যোগে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।