
কক্সবাজার, ঈদগাঁও :
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়া বাবু বাজার কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র সমবায় সমিতিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা এবং মূল্যবান কৃষি যন্ত্রপাতি আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ দুর্নীতির পেছনে সমিতির সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সিরাজুল ইসলাম এবং তার ঘনিষ্ঠদের নাম উঠে এসেছে।
সদস্যদের অভিযোগ, সমিতির তহবিল থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ ও কৃষি উপকরণ আত্মসাৎ করা হয়েছে। সোলার ব্যাটারি ও যন্ত্রপাতি গোপনে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলেও তারা দাবি করেন। অবাক করার বিষয় হলো, বিগত তিন বছরেও সমিতির কোনো অডিট হয়নি। এই অনিয়মের মধ্যেই হঠাৎ সমবায় নির্বাচন ঘোষণায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে সদস্যদের মধ্যে।
সদস্য নুরুল আলম, বেলাল উদ্দিন, আবু শমা ও জসিম উদ্দিন জানান, “রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নির্বাচন হলে দুর্নীতিকে বৈধতা দেওয়া হবে।” তারা লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাক্মা এবং উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম বরাবর নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম জানান, “গত তিন বছর কোনো অডিট হয়নি। আমরা একটি নিরীক্ষা শুরু করেছি এবং একজন অফিসারকে দায়িত্বও দিয়েছি।” তবে অডিট রিপোর্ট ছাড়াই কেন নির্বাচন ঘোষণা করা হলো—সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কার কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক মেরুকরণ তীব্র হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, “সমবায়ের অনিয়মের কথা শুনেছি। চাই এলাকায় শান্তি বজায় থাকুক। নির্বাচন নিয়ে কোনো অস্থিতিশীলতা কাম্য নয়।”
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জুবায়েদ উল্লাহ জুয়েল জানান, “এলাকায় প্রতিদিন উত্তেজনা বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটতে পারে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গজালিয়া সমবায়ের এ ঘটনা শুধুমাত্র স্থানীয় অনিয়ম নয়, বরং এটি দেশের সমবায় ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের প্রতিচ্ছবি। তারা মনে করছেন, অডিট ছাড়া নির্বাচন হলে তা সহিংস রূপ নিতে পারে এবং এর দায় প্রশাসন এড়াতে পারবে না।